দুটি বস্তুর একটির উপর দিয়ে আরেকটি চলার সময় বস্তু দুটি স্পর্শ তলে এর গতির বিরুদ্ধে যে বল উৎপন্ন হয় বা ক্রিয়া করে তাকে ঘর্ষণ বল বলে।
মনে করি কোন সমতল স্থানে একটি কাঠের ব্লক A রয়েছে। এই অবস্থায় ব্লকটির ওজন W খাড়া নিচের দিকে ক্রিয়া করবে। নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুসারে একটি সমান ও বিপরীতমুখী বল W' কাঠের ব্লকটির পর কাজ করবে। এই দুই বলের মান সমান ও বিপরীতমুখী হবার কারনে ব্লকটি স্থির থাকবে এবং কোন ঘর্ষণ বল উৎপন্ন হবে না।
এখন উক্ত তলের সমান্তরালে ব্লকটিতে কিছুটা বল F প্রয়োগ করা হলে দেখা যাবে ব্লকটি নড়বে না স্থির থাকবে। W ও W' পরস্পর সমান ও বিপরীত হওয়ায় একে অপরকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। আপাতদৃষ্টিতে ব্লকটিতে F ছাড়া অন্য বল কাজ না করায় গতি সঞ্চার হওয়ার কথা। আসলে ব্লক ও ব্লক সংলগ্ন তলের মধ্যবর্তী ঘর্ষণ বল F' প্রযুক্ত বল F এর বিপরীতে ক্রিয়া করার কারণে ব্লকটি স্থির থাকে।
প্রযুক্ত বল F ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করতে থাকলে এক পর্যায়ে ব্লকটি গতিশীল হবে। ব্লকটিতে গতি সঞ্চার হবার উপক্রম হলে এতে যে ঘর্ষণ বল ক্রিয়া করে সেটা হলো সীমান্তিক ঘর্ষণ বল।
{tocify} $title={Table of Contents}
ঘর্ষণ বলের সীমান্তিক মান বা সীমান্তিক ঘর্ষণ বল
কোন তলের উপর দিয়ে কোন একটি বস্তুকে গতিশীল করার জন্য বস্তু টিকে যে পরিমাণ বল প্রয়োগ করলে তার গতির সঞ্চার হওয়ার উপক্রম হয়, ঐ সময়ে বস্তুদ্বয়ের মধ্যকার আপেক্ষিক গতিকে বাধা প্রদানকারী ঘর্ষণ বলের মানকে সীমান্তিক ঘর্ষণ বল বলে।
স্থিতি ঘর্ষণ বল
কোন তলের উপর অবস্থিত কোন বস্তুকে গতিশীল করার জন্য বল প্রয়োগ করা হলে, বস্তুটিতে গতি সঞ্চার হওয়ার আগ পর্যন্ত অর্থাৎ আপেক্ষিক গতি সৃষ্টি হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত যে ঘর্ষণ বল ক্রিয়া করে তাকে স্থিতি ঘর্ষণ বল বলে। এই বলের মান শূন্য হতে সীমান্তিক ঘর্ষণ বল পর্যন্ত যে কোনটা হতে পারে।
ঘর্ষণের সুবিধা ও অসুবিধা
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঘর্ষণের নানাবিধ প্রয়োগ দেখতে পাই। আমরা যে হাঁটাচলা করি ঘর্ষণ না থাকলে তা পারতাম না পিছলে পড়ে যেতাম। কাঠে পেরেক বসানো ধর্ষণের কারণে সম্ভব হয়। কোন বস্তু আমার ধরে রাখতে পারি, তা পিছিলে পড়ে যায় না ঘর্ষণের কারণে। ঘর্ষণ আছে বলে আমরা দড়িতে গিট দিতে পারি। এরূপ ঘর্ষণের নানাবিধ প্রয়োগ ও সুবিধা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রয়েছে।
আরো পড়ুন অভিকর্ষজ ত্বরণ ও পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে এর মান।
তবে ঘর্ষণের কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন: ঘর্ষণের কারণে কোন যন্ত্রের গতিশীল অংশগুলো ক্রমশ ক্ষয় হওয়া এবং অপ্রয়োজনীয় তাপ উৎপাদনের কারণে যান্ত্রিক ক্ষতি। এসব কারণে জানতে দক্ষতা ও কমে যায়। এসব সমস্যা দূর করার জন্য যন্ত্রের গতিশীল পিচ্ছিল পদার্থ ব্যবহার করতে দেখা যায়।